আপনি
হয়তবা মনের সুখে বনে জঙ্গলে হেঁটে বেড়াচ্ছেন আর প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ
করছেন। কিন্তু কখনো কি চিন্তা করেছেন কোন জীবগুলো আপনার জীবনের জন্য
ক্ষতিকর হতে পারে?
হ্যা আমি জানি আপনি করেছেন। আপনি বেশীরভাগ সময়ই
চিন্তা করেন বাঘ মামা, সিংহ আপনার জীবনের জন্য সবচাইতে বড় হুমকি। সেইজন্য
আপনি এসব প্রাণির থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমি বলবো আপনি তাহলে
প্রকৃতি সম্পর্কে খুব কমই জানেন!! এইগুলো আপনার জীবনের জন্য মোটেই হুমকি
স্বরূপ না!! যেগুলো আপনার জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ সেগুলোর নামই হয়তবা
আপনি শুনেন নি। তবে আপনাকে আমি আর অন্ধকারে রাখবো না। চলুন জেনে নিই
বর্তমান পৃথিবীর সবচাইতে ভয়ংকর প্রাণিগুলো কি কি? আর কেনইবা তারা ভয়ংকর।
বক্স জেলিফিস
|
বক্স জেলিফিস(ছবিটি উইকিমিডিয়া থেকে নেয়া) |
সামুদ্রিক
জেলিফিশগুলোর অনেক রকম প্রজাতি রয়েছে। সব প্রজাতিই কমবেশি মারাত্মক।
সামুদ্রিক মাছের মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো এই বক্স জেলিফিশ। আপনি হয়তোবা মনে
করছেন এই প্রাণি শুধুমাত্র কিছু সামুদ্রিক মাছকে মেরে ফেলছে, তাহলে আবার
সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণীর তালিকাতে আসলো কেন? কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়। এর
চিকন সুত্রাকার অংশ থেকে একধরণের টক্সিক বের হয় যা এই পর্যন্ত আবিষ্কৃত সব
বিষের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর। আর সবচাইতে বড় কথা এই বিষ আপনাকে তিন থেকে পাঁচ
মিনিটের মধ্যে মেরে ফেলতে সক্ষম। সুতরাং, বক্স জেলিফিশ থেকে সাবধান!!
কোন স্নেইল
|
কোন স্নেইল(সামুদ্রিক বাঘ) |
বক্স
জেলিফিশের মতো এর আবাস্থল ও সমুদ্রে। এটি দেখতে যতটা সুন্দর এর কাজ তত
ভয়ংকর। আপনি যদি এটিকে সাধারণ কোন সামুদ্রিক জীব ভেবে বসে থাকেন তাহলে
জীবনের সবচাইতে বড় ভুলটি করবেন। আজ পর্যন্ত এর বিষের কোন প্রতিষেধক
আবিষ্কৃত হয়নি। এর এক ফোঁটা বিষ একসাথে ২০ জন পুর্ণবয়স্ক মানুষকে মেরে
ফেলতে সক্ষম। এর বিষ যদি আপনার শরীরের কোন অংশে লাগে তাহলে আপনি এক মিনিটের
মধ্যে মারা যাবেন এটা নিশ্চিত! কেননা আপনি ইউনটিউভ এ এর নাম লিখে সার্চ দিন পেয়ে যাবেন কতক্ষন সময় লাগে এর বিশ মানুষের শরীরে ছড়িতে পরতে। তাই এ থেকেও সাবধানে থাকুন।
ব্ল্যাক মাম্বা
পরিবারভুক্ত এক প্রজাতির বিষধর সাপ। এটি আফ্রিকা সবচেয়ে বিপজ্জনক ও ভয়ংকর সাপ। আফ্রিকার একটি বড় অঞ্চলজুড়ে এই সাপের বিস্তৃতি লক্ষ করা যায়। আকৃতি দিক থেকে ব্ল্যাক মাম্বা আফ্রিকার সর্ব বৃহৎ, এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিষধর সাপ
হিসেবে চিহ্নিত। একটি পূর্ণ বয়স্ক ব্ল্যাক মাম্বার দৈর্ঘ গড়ে প্রায় ২.৫ মিটার এবং সর্বোচ্চ ধৈর্ঘ ৪.৩ মিটার। আপনি কল্পনা করার আগেই এটি
আপনাকে ছোবল বসিয়ে দিতে সক্ষম। রাস্তার পাশে যদি ব্ল্যাক মাম্বা থাকে তাহলে
চিনতে ভুল করবেন না কিন্তু!!
পাহাড়ী মহিষ
|
পাহাড়ী মহিষ |
আফ্রিকান
তৃণভূমিতে এরা বাস করলেও এরা খুবই আক্রমণাত্মক। কোন সতর্কবার্তা ছাড়াই এরা
আপনাকে আক্রমণ করে বসতে পারে। দুই হাজার পাউন্ডের এইসব মহিষ ঘন্টায় ৪০
কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে। তাহলে ভরবেগ হয় কত খেয়াল করেছেন? আশি হাজার
পাউন্ড। এইবার চিন্তা করুন আশি হাজার পাউন্ডের এইসব মহিষ আপনাকে আক্রমণ
করলে আপনার কি অবস্থা হতে পারে?
সাইফু পিপড়া
|
সাইফু পিঁপড়া |
এই
পিপড়াগুলো ড্রাইভার পিঁপড়া নামে পরিচিত। এরা দলবেধে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ
পিঁপড়া একসাথে থাকে। এদের চলার পথে কোনপ্রাকার বাঁধা সৃষ্টি হলেই এরা
আক্রমণ করে বসে এবং বিষাক্ত হুল শরীরে ঢুকিয়ে দেয়।
ডেথস্টকার মাকড়সা
|
ডেথস্টকার |
নাম
দেখেই বুঝতে পারছেন এই মাকড়সার কি কাজ! দেখতে আকর্ষনীয় না হলেও আপনাকে
মারার বেলায় এর থেকে পটু আর কেউ নেই। হয়ত আপনার পায়ের নিচে এসে বসলো আর
আপনি ইহাকে দেখতে পেলেন না। তাহলে আপনার কি হবে একবার ভাবুন তো? ওহ, আপনাকে
তো বলাই হয় নাই মাকড়সা দ্বারা প্রতি বছর যতগুলো মৃত্যুঘটে তার
তিন-চতুর্থাংশের হোতা এই স্করপিয়ন!!
মানুষ
|
মানুষ(জীব বৈচিত্র হুমকীর মুখে) |
উপরে
যেসব জীবের কথা বলেছি সেগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা মানুষ এখনো অর্জন
করেনি। কিন্তু বুঝে অথবা না বুঝে নিজেদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। নানা রকম
বন্য প্রাণি তো হত্যা করছেই আবার সেই সাথে সামান্য বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে
সংঘর্ষ তৈরী করছে। অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করার জন্য পারপমাণবিক বোমা
তৈরী করছে যার কয়েকটা দিয়েই একটা দেশকে ধধংস করে ফেলা সম্ভব। উপরের জীবগুলো
তাদের ফিজিক্যাল শক্তি বা আগে থেকে প্রাপ্ত শক্তি ব্যবহার করছে। কিন্তু
মানুষ নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে তৈরী করছে মারণাস্ত্র, যা একদিন মানুষকে পৃথিবী
থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে। এর মতো মানুষের মতো বেঈমান আর কেউ হতে পারে না,
আর কেউ হবে না। পৃথিবীর মাটি এই বেঈমানগুলোকে কেন জায়গা দিলো???
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
প্রিয় পাঠক, উক্ত লেখনীটি পঠন করার পরে দয়া করে আপনার একটি মূল্যবান মন্তব্য প্রকাশ করুন। আপনার একটি মন্তব্য একজন লেখক কে অবশ্যই আরো ভালো কিছু লেখার জন্য অনুপ্রেরণা দেয়। লেখনী/পোস্টে অনেক ভুল থাকতে পারে। কিন্তু আশা করি উক্ত ভুল গুলোকে আপনি ক্ষমার চোখে দেখবেন। দয়া করে এমন কোন মন্তব্য করবেন না যাহা দ্বারা লেখকের মন আঘাতপ্রাপ্ত হয়।